লেখক : Tosiqul Islam
🎬মুভি : ওপেনহাইমার
🔎জনরা : ড্রামা, থ্রিলার
⏱️রান টাইম : ৩ ঘন্টা
🚩দেশ : আমেরিকা
📝ভাষা : ইংরেজি
🎥পরিচালক : ক্রিস্টোফার নোলান
📺রিলিজ ডেট : ২১ জুলাই ২০২৩
➡️ বাতিকগ্রস্ত, পাগল, প্রখর মেধাবী, জিনিয়াস এই চারের সমন্বয়ে যে মানুষটা তৈরী হয় তিনি জে. রবার্ট ওপেনহাইমার। নিজের লক্ষ্য অর্জনে তিনি করতে পারেন যেকোন কিছুই। যে জিনিশ একবার শুরু করেন তার শেষ না দেখে তিনি ছাড়েন না লাগুক সেটা এক বছর বা দশ বছর তিনি সেটা করে তবেই খান্ত হবেন। তার এই খ্যাপাটে স্বভাবের কথা খুব ভালো করেই জানতেন তৎকালীন মার্কিন প্রশাসন । ওপেনহাইমার ততদিনে ছিলেন বিজ্ঞান মহলে এক ফেমাস সাইন্টিস্ট। ছাত্রাবস্থাতেই কোয়ান্টম ফিজিক্স নিয়ে তার ছিলো ব্যাপক গবেষনা। এই কোয়ান্টম ফিজিক্স নিয়ে তার থিওরি তৎকালীন বিজ্ঞান মহলে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলো । তিনি হয়ে উঠেছিলেন সেসময়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা পদার্থবিদ। । তাই তারা আর দেরি করলেন না। লেফটেন্যান্ট জেনারেল লেসলি গ্রোভস ( ম্যাট ডেমনকে) পাঠালেন ওপেনহাইমারের সাথে দেখা করতে।>কারন গোপন সূত্রে খবর জার্মানীর হিটলার বাহিনী পরমানু বোমা তৈরীতে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে। একবার তারা পরমানু বোমা তৈরী করতে পারলে গোটা পৃথিবী চলে যাবে হিটলারেট পদতলে। তাই যত দ্রুত সম্ভব জার্মানির আগেই আমেরিকার অস্ত্রভান্ডারে যোগ করতে হবে পরমানু অস্ত্র। আর এর জন্য দরকার ওপেনহাইমারের মতো একজন দক্ষ, উন্মাদ ঠান্ডা মাথার বিজ্ঞানী। তাকে অফার দেয়া হলো তৈরী করো পরমানু বোমা। দেখিয়ে দাও তুমি কতবড় বিজ্ঞানী। আইনস্টাইন তাকে সাবধান করলেন। তোমার আবিষ্কার কেড়ে নিবে লক্ষ কোটি মানুষের প্রাণ। তোমার হাতে যে রক্ত লেগে থাকবে তার দাগ তুমি কোনদিনও মুছতে পারবে না। তবে শেষমেশ ওপেনহাইমার রাজি হলেন। তাকে প্রধান করে আমেরিকার সব বড় বড় বিজ্ঞানীদের একত্র করে তাদের পরিবারসহ নিয়ে যাওয়া হলো নিউ মেক্সিকোর jornada del Muerto মরুভূমিতে। সেখানে সেনাবাহিনীর তত্ত্ববধানে কঠোর গোপনীয়তায় শুরু হলো মার্কিন সরকারের এক গোপন মিশন ম্যানহাটন প্রজেক্ট। মাথায় পাহাড়সম চাপ নিয়ে ওপেনহাইমার শুরু করলেন তার পরমানু বোমা তৈরীর মিশন।
➡️ পুরো মুভি স্টারকাস্টে ভরপুর। কিলিয়ান মারফি, রবার্ট জুনিয়র, ম্যাট ডেমন, রামি মালেক, এমিলি ব্লান্ট, ফ্লোরেন্স পুগ এত-এত বাঘা অভিনয়শিল্পী থাকতেও সিনেমাটি আলোচনায় ছিলো শুধুমাত্র একটি নামের কারনে। তিনি দ্য গ্রেট ক্রিস্টোফার নোলান। নোলান নামটিই যথেষ্ট একটি মুভি হাইপে রাখতে। নোলানের অন্যান্য মুভিট তুলনায় এটা কিছুটা আলাদা। যেহেতু এটি বায়োপিক মুভি তাই যদি ভেবে থাকেন এখানে নোলানের পূর্বের মুভির মতো থ্রিলিং সাসপেন্স ভাইব পাবেন তাহলে ভুল।
টানটান উত্তেজনাময় কোন গল্প নয় ওপেনহাইমারের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিকগুলো নিয়ে সিনেমা সন্নিবেশিত হয়েছে ৷ গল্পে কিছু কিছু সময় বর্তমান থেকে অতীতে ব্যাকস্টোরিতে চলে গেছে। তারপর আবার বর্তমানে ফিরে এসেছে৷ ওপেনহাইমারের পারিবারিক জীবন, তার আবেগ, অনুভূতি, যৌনতা, সবকিছুই নোলান এখানে খোলাখুলিভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
তাই সিনেমাটা দেখবার সময় কিছুটা বোরিং ফিল হবে তবে গল্পের ভেতর একবার ঢুকে যেতে পারলে মনে হবে তিনটি ঘন্টা যেনো চোখের পলকে চলে গেলো। ওপেনহাইমার চরিত্রে কিলিয়ান মারফি নিজেকে এক অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। তিনি ওপেনহাইমার চরিত্রে অভিনয় করেননি বরং বাস্তবেই যেনো ওপেনহাইমার হয়ে গেছেন।
টানটান উত্তেজনাময় কোন গল্প নয় ওপেনহাইমারের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিকগুলো নিয়ে সিনেমা সন্নিবেশিত হয়েছে ৷ গল্পে কিছু কিছু সময় বর্তমান থেকে অতীতে ব্যাকস্টোরিতে চলে গেছে। তারপর আবার বর্তমানে ফিরে এসেছে৷ ওপেনহাইমারের পারিবারিক জীবন, তার আবেগ, অনুভূতি, যৌনতা, সবকিছুই নোলান এখানে খোলাখুলিভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
তাই সিনেমাটা দেখবার সময় কিছুটা বোরিং ফিল হবে তবে গল্পের ভেতর একবার ঢুকে যেতে পারলে মনে হবে তিনটি ঘন্টা যেনো চোখের পলকে চলে গেলো। ওপেনহাইমার চরিত্রে কিলিয়ান মারফি নিজেকে এক অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। তিনি ওপেনহাইমার চরিত্রে অভিনয় করেননি বরং বাস্তবেই যেনো ওপেনহাইমার হয়ে গেছেন।
পিকি ব্লাইন্ডার্সের টমি শেলবি নাকি ওপেনহাইমার কোন চরিত্রে তাকে সবচেয়ে ভালো মানিয়েছে সেটা নিয়ে তর্ক হতে পারে। তবে আমি টমি শেলবি আর ওপেনহাইমার দুটোকেই সমান মার্কস দেবো৷ বলাই বাহুল্য কোন রকম কিছু না ঘটলে এবারের অস্কারের সেরা অভিনেতা এই কিলিয়ান মারফিই জিততে চলেছেন। পাশাপাশি যার নামটা না বললেই নয় তিনি RDJ. তার ক্যারেক্টারের নাম লুইস স্টাউস। আমেরিকার ডিফেন্স মিনিস্ট্রির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, মাথায় কাঁচাপাকা অল্প চুল গুরুগম্ভীর ডায়লগে যতক্ষন পর্দায় ছিলেন সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নিয়েছেন। মারফির মতো তিনিও এবারের অস্কারে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ক্যাটাগরিতে বেশ বড় এক প্রতিদ্বন্দ্বী সেটা বলাই যায়।
➡️ সিনেমাটোগ্রাফি, বিজিএম, সাউন্ড মিক্সিং, কস্টিউম, লোকেশন, ছিলো এক কথায় টপ নচ। কোনরকম খামতি নেই। পুরো মুভি এক গুরুগম্ভীর ভাব বজায় রেখে ছিলো। অবশ্য সিনেমার যা কনসেপ্ট তাতে করে এরকম গুরুগম্ভীর ভাইব এই ধাঁচের সিনেমার সাথে মানানসই। প্রকৃত মুভি লাভাররা নিঃসন্দেহে এই মাস্টারপিস না দেখে ছাড়বে না। আর যারা এ ধরনের মুভি দেখে অভ্যস্ত নয় তারাও ওয়ান টাইম ওয়াচ হিসেবে একবার দেখে নিতেই পারেন।
Social Plugin